আমার গল্পের নায়ক চোখে কম দেখে আর নায়িকা কানে কম শোনে। তাই যখন কোন কিছু দেখার দরকার হয় ছেলেটি মেয়ের উপর নির্ভরশীল থাকে আর যখন কিছু শোনার কিছু দরকার হয় তখন মেয়েটি ছেলেটির দিকে তাকায়।
রিয়া চমকে উঠলো। আমার গায়ে হাত দিয়ে বলল – দাড়াও দাড়াও। তুমি এইটা কি করছো!
আমি বললাম – কি করছি? আমি একটি গল্প বলছি।
– না লেখক সাহেব, আপনি গল্প বলছেন না। আপনি আমাদের কথা লিখে দিচ্ছেন হুবহু। আমি ডান কানে কম শুনি। আর তোমার চোখে ভারী চশমা। চশমা ছাড়া তুমি কিচ্ছু দেখতে পারো না।
রিয়ার কথার উত্তর না দিয়ে আমি সিগারেট ধরালাম। ছাই লম্বা হচ্ছে। যে কোন সময় মেঝেতে পড়ে যাবে। জানালার কাছে অ্যাশট্রে। উঠতে ইচ্ছে করছে না। রিয়া আমায় স্থির চোখে দেখছিল। উঠে অ্যশট্রে এনে দিল টেবিলের উপর।
– কথা বলছো না যে। বোলো, তুমি আমাদের গল্প লিখছো না? সত্যি করে বোলো তো?
আমি সিগারেট টেনে যাচ্ছি।আজ বাইশদিন যাবৎ আমার গল্পের নায়ক সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে । তার কষ্ট হচ্ছে। তার বুক হাশফাশ করছে। নিকোটিনের জন্য জিভ কাতরাচ্ছে। তার মস্তিস্ক এক রাশ নিকোটিন চায়।
আমি লেখক। আমি আমার সৃষ্টিকে কষ্ট দিতে পারি না। আমি সিগারেট টানছি। ভুর ভুর করে ধোঁয়া ছাড়ছি। আমার ধোঁয়া আমার গল্পের নায়কের মগজে ঢুকে যাচ্ছে। তার মগজ ভরা এখন নিকোটিনের ধোঁয়া। তার হাতে চশমা ধরে রাখা। তাই সে দেখতে পারছে না গল্পের নায়িকা কিভাবে মুগ্ধ হয়ে সিগারেটের ধোঁয়ার আড়ালে তাকে দেখছে।
যেমনটা আমি দেখতে পারছি না রিয়া আমায় দেখছে। আমার চশমাটাও খুলে হাতে রেখেছি। চশমাটা একদিন হারিয়ে ফেলবো।
রিয়া কি শুনতে পারছো? আমি চশমাটা একদিন সত্যি সত্যি হারিয়ে ফেলবো
আরও গল্প পড়তে স্টোরি সেকশনে চলে আসুন