বাবুর বাবাটা খুব বোকা! আমি বললাম বাবু ঘুমাচ্ছে , কাশতে হলে বারান্দায় যাও
ওমা সত্যি সত্যি এই শীতের রাতে সে উঠে বারান্দায় চলে গেল। একটু ভেবেও দেখলো না, বাবু একবার ঘুমিয়ে পড়লে সকাল না হওয়া পর্যন্ত জেগে উঠে না, এইটা বাবুর অভ্যাস। অথচ বাবুর বাবাটা বুক খামচে দাঁতে ঠোঁট চেপে কাশি আটকে বারান্দায় গেল। কাশি চাপিয়ে রাখা কঠিন। বাবুর বাবাটা কঠিন কাজ অনায়াসে করে ফেলতে পারে। যখন বাবু আল্লাহ্’র কাছ থেকে আমাদের কাছে আসবে সেদিন থেকে বাবুর বাবাটা কঠিন কঠিন সব কাজ করে আসচ্ছে।
আমাদের বিয়ে তো কেউ মেনে নেয়নি, তাই বাবু আসার দিন আমাদের কাছে কেউ আসেনি।তাদের যে বড্ড অভিমান! আমার রক্ত দরকার পড়েছিল, বাবুর বাবার সাথে আমার রক্তের মিল।
ডাক্তার রেজা বাবুর বাবা -কে বলল – এমদাদ সাহেব চলুন , এখনি আপনার রক্ত লাগবে, চলুন চলুন, ওমা আপনি এখনো আপনার স্ত্রীর হাত ধরে রেখেছন কেন? ছেড়ে দিন , আমার সাথে চলুন, আপনার রক্ত লাগবে, চলুন এমদাদ সাহেব , দেরী করবেন না।
বাবুর বাবা যেতে পারছিল না। যাবে কীভাবে, আমি তো শক্ত করে তার হাত ধরে রেখেছিলাম!! আমার ভয় করছিল , খুব ভয় করছিল।শেষপর্যন্ত আমার বেডের পাশে আরেকটা বেড এনে তার রক্ত নেয়া হল।বাবুর বাবাটা একবারের জন্যও আমার হাত ছেড়ে দেয়নি।
যখন আমাদের বাবুকে তার হাতে তুলে দেয়া হল বাবুর কানে বাবুর বাবাটা আযান দিয়েছিল। নার্স বলছিল – এমনটা করবেন না স্যার। এইটা তো মৃত বাচ্চা। মৃতবাচ্চাদের আযান দেয়া যায় না। বাবুর বাবা তারপরও আযান দিয়েছিল। আমি যে আমাদের বিয়ের প্রথম রাতে তাকে বলে দিয়েছিলাম – আমার বাবুর কানে প্রথমেই যেন তোমার আযান পৌঁছে।
সে ভুলে যায়নি।
যেমনটা ভুলে যায়নি আজ প্রায় চারবছর পরও আমাদের মাঝে আল্লাহর কাছে চলে যাওয়া বাবুর জন্য আলাদা জায়গা রাখতে
আরও গল্প পড়তে স্টোরি সেকশনে চলে আসুন