মুক্তা ব্র্যান্ডের পানির বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এর উৎপাদন প্রক্রিয়ার শুরু থেকে শেষ অব্দি প্রায় তিনশ’র অধিক প্রতিবন্ধী ভাই বোনেরা যুক্ত। তাদের প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয় মুক্তা পানির কারখানা।
পানির বিক্রয় থেকে যে লাভ হয়, তা সম্পূর্ণভাবে ব্যয় হয় প্রতিবন্ধীদের উন্নয়নে।
মুক্তা পানির বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন নেই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জাতীয় সংসদ সচিবালয় থেকে শুরু করে সরকারী/আধা-সরকারী/স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে অফিসিয়াল পানি হিসেবে ব্যবহার করা হয় মুক্তা ব্যান্ডের পানি।
আমাদের মন্ত্রী আমলাগন আর যাই হক নিজেদের ক্ষতি হয় এমন কিছু করবে না। উনারা যেহেতু এই পানি পান করে সুতরাং মুক্তা ব্র্যান্ডের পানি বিশুদ্ধ ও নিরাপদ। দামেও দারুণ সস্তা।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন সুইডিশ কারিগরি সহায়তায় টংগীতে মুক্তা ব্র্যান্ডের পানির কারখানা।
মুক্তা পানির বোতল হিসেবে অপরিচিত লাগতে পারে। সাধারণত রেস্টুরেন্টে, হোটেলে, দোকান এই পানির বোতল দেখা যায় না। দেখা যায় কোকা কোলা ব্র্যান্ডের কিনলে, দেখা যায় মাম, স্পা, ফ্রেশ, একুয়াফিনা।
এই সব ব্র্যান্ডের পিছনে খরচ হয় লক্ষ কোটি টাকার মার্কেটিং, প্রতিটি বিভাগ জেলা উপজেলা শহরের অলিতে গলিতে মহল্লায় মহল্লায় এদের ডিলাররা পৌঁছে গেছে।
সেখানে দেশীয় ব্র্যান্ডের মুক্তা পানির পিছনে নেই চমকপ্রদ মার্কেটিং, অর্থের ছড়াছড়ি, উচ্চ পারিশ্রমিকে নিযুক্ত ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর।
ক্ষেত্র বিশেষে মুক্তা পানির ডিলার প্রাপ্তিরও সুযোগ হয় না।
অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় বাজারে মুক্তা তাই ব্র্যান্ড হিসেবে অনেক পিছনে অবস্থান করছে।
একারণে হয়ত ইচ্ছা থাকা শর্তেও সহজে ক্রয় সুবিধার অভাবে এই পানি সর্ব সাধারণের হাতে হাতে এসে পৌঁছাচ্ছে না।
তাহলে উপায়?
উপায় আমরা। আপনি, আমি, আমরা। আমরাই মুক্তা পানির অ্যাম্বাসেডর।
আজ থেকে যখনই পানি কিনতে যাবো, দোকানদারকে জিজ্ঞাস করবো মুক্তা ব্র্যান্ডের পানি আছে নাকি। রেস্টুরেন্টে কিংবা হোটেলে খেতে বসে বলব, আমাকে মুক্তা ড্রিংকিং ওয়াটার দিন।
মাস্ক ছাড়া মার্কেটে মার্কেটে ঘুরে বেড়াচ্ছে উত্তরার জুলফিকার, কিন্তু কেন?
প্রথম প্রথম ওদের কাছে থাকবে না। মুক্তা পানি চাইলে হা করে চেয়ে থাকবে। স্বাভাবিক, কারন অন্যান্য ব্র্যান্ডের সাথে পাল্লা দিয়ে মুক্তা এখনও বাজারে ঢুকতে পারেনি।
কিন্তু কাস্টমারের ক্রমাগত চাহিদা ও আগ্রহের ফলে একসময় কিনলে, মামের বোতলের বদলে ওয়াটাররা মুক্তা ব্র্যান্ডের পানি বোতল নিয়ে দৌড়ে আপনার কাছে ছুটে আসতে বাধ্য হবে।
আমরা ডিম্যান্ড তৈরি করলে ওরা সাপ্লাই দিতে বাধ্য।
লাগবে না তোর কোটি টাকার মার্কেটিং। আমরা আমজনতাই মুক্তার মার্কেটিং এর কাজটা করবো।
বোতলের পানিই যখন কিনছি, আসুন আমাদের প্রতিবন্ধী ভাই বোনদের তৈরি দেশীয় ব্র্যান্ডের পানিটাই না হয় কিনি।
মুক্তা পানির অর্ডার লিংক – Mukta Drinking Water
ওরা হাত পাতেনি, সাহায্যও দাবী করেনি। ওরা কাজের ক্ষেত্র পেয়েছে, পরিশ্রম করছে। বন্ধুর বেশে আমরা ওদের ঘামের মূল্যটুকু শুধু চুকিয়ে দিব, ব্যস।
একটা দৃশ্য কল্পনা করুন,
প্রচণ্ড তৃষ্ণায় মুক্তা পানির বোতল খুলে আপনি গলাটা ভিজিয়ে নিচ্ছেন, শহরের অন্য প্রান্তে ঠিক সেই সময় মুক্তা পানির কারখানায় কর্মরত একজন স্বাবলম্বী প্রতিবন্ধী ভাইয়ের মুখে তখন ফুটে উঠছে বিজয়ের তৃপ্ত হাসি।
দৃশ্যটি কতই না মায়াময়!
রাফিউজ্জামান সিফাতের বইসমূহ