করোনা চিকিৎসাঃ নো ওয়ান কিলড জারিন

শিশু মৃত্যু জারিন

শিক্ষক বাবা দুই মাস তিনদিনের অসুস্থ শিশু জারিনকে নিয়ে সুদূর ঝিনাইদহ থেকে ছুটে আসে সোহরাওয়ার্দি মেডিক্যালে, রোগী না দেখেই সেখান থেকে তাদের অন্যত্র পাঠিয়ে দেয়া হয়। সন্তানকে নিয়ে বাবা মা রাতের অন্ধকারেই ছুটতে ছুটতে আসে ঢাকা মেডিক্যাল। সেখানেও চিকিৎসা মেলেনি। বলা হয় অন্য কোথাও যেতে।

তারা যায় শিশু হাসপাতাল। সেখানেও পায় না চিকিৎসা! বিনা চিকিৎসা’য় তাকে ফেরত দেয়া হয়।

শিশু হাসপাতালের গার্ড, দালাল চক্র শিশু জারিন-এর বাবা মাকে আকারে ইঙ্গিতে তাদের একটি বিশেষ প্রাইভেট হাসপাতালে নিতে যেতে বলে। এমনকি কর্তব্যরত ডাক্তারও শিশুর বাবাকে বলে প্রাইভেটে নিয়ে যেতে। বাধ্য হয়ে গভীর রাতে শিশু জারিনকে সেই প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

প্রাইভেটে যা কথা ছিল দুদিন পর তারও কয়েকগুণ বেশী টাকা দাবী করে। তিনদিনে ৪৫ হাজার টাকা বিল আসে, কিন্তু বাচ্চার চিকিৎসা মেলে না।

বাচ্চার অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকে। অসহায় শিক্ষক বাবা কোন রকমে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করে (বিল পরিশোধ না করলে রোগী ছাড়বে না) শিশু জারিনকে নিয়ে বাধ্য হয় গ্রামের বাড়ি ফিরে যায় ।

পরদিন শিশু জারিন মারা যায়।

যমুনা টেলিভিশনের ক্যামেরায় ফুটে উঠেছে সমস্ত চিত্র

যদি বলি, জারিন মারা যায়নি, তাকে হত্যা করা হয়েছে?

বিনা চিকিৎসা দুইমাস তিন দিনের শিশু জারিনকে হত্যা করেছে।

এই পৃথিবীতে হাতির পেটের বাচ্চার জন্য চোখের পানি জোটে আর মানুষের বাচ্চা বিনা চিকিৎসা’য় ধুঁকে ধুঁকে মারা যায়, কেউ পাত্তাই দেয় না। কেউ খোঁজই রাখে না। কেবল বাড়ির পাশে বেড়া দেয়া ছোট্ট কবরের পাশে বাবা মা বসে থাকে।

করোনার শুরুতে একটা পোস্টার প্রচন্ড ভাইরাল হয়েছিল। যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ার এক শিশু মৃত্যুর আগে বলছিল – আমি আল্লাহ্‌র কাছে সব বলে দিবো।

I will Tell GOD everything

মন্তব্যের ঘরে অনেকেই সেদিন বলেছিল করোনার মহামারীতে আল্লাহ্‌ তায়ালা হয়তো সেই অবুঝ শিশুর বিচারের কথা শুনেছেন।

আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে, বিনা চিকিৎসা’য় মৃত্যুর আগে শিশু জারিন কি আমাদের নামেও বিচার দিয়েছিল?

শিশু জারিনে সেই বিচার সহ্য করবার ক্ষমতা আছে তো?

দুইমাস তিন দিনের শিশু কন্যা জারিন হত্যার বিচার এই দেশের মাটিতে কোনদিনই হবে না। কারন

নো ওয়ান কিলড জারিন


রাফিউজ্জামান সিফাতের বইসমূহ

Leave a Reply

Your email address will not be published.